ভিরোফাজ : ভাইরাস হ্রাসকারী এক কৃতঘ্ন ভাইরাস

নিশ্চয়ই, ব্যাক্টিরিওফাজ এর নাম আমরা সবাই শুনেছি? হ্যাঁ, যেসকল ভাইরাস ব্যাক্টেরিয়াকে বিনাশ করতে সক্ষম অথবা ব্যাক্টেরিয়া সমূহের সংখ্যাবৃদ্ধ্বি হ্রাস করতে সক্ষম তাদেরকেই ব্যাক্টেরিওফাজ বলে। কিন্তু, এমন কোনো ভাইরাস আছে কি যা ভাইরাসের সংখ্যা বৃদ্ধি হ্রাস করতে সক্ষম?
হ্যাঁ, আছে আর এদেরকে ভিরোফাজ বলে তবে এদের কার্যপদ্ধতি টা একটু ভিন্ন ধরনের।
২০০৮ সালে সর্বপ্রথম মামাভাইরাস আবিষ্কার করা হয়েছিল যা সাধারণ ভাইরাসের তুলনায় আকারে বড় ছিল।
গবেষকরা লক্ষ্য করলেন যে, মামাভাইরাস সমূহ Acanthamoeba নামক এক ধরণের আ্যমিবা কে হোষ্ট সেল হিসেবে ব্যাবহার করতে পারে।
গবেষণা চলাকালীন, গবেষকরা যখন Acanthamoeba আ্যমিবা পর্যবেক্ষণ করছিলেন তখন তারা সেই আ্যমিবা কোষে মামাভাইরাস ছাড়াও আরো কিছু ক্ষুদ্র ভাইরাস লক্ষ্য করেন। পরবর্তীতে এদেরকে নাম দেওয়া হয় স্পুটনিক ভাইরাস।
গবেষকগণ অবাক হয়েছিলেন যখন তারা লক্ষ্য করলেন যে যতক্ষণ না আ্যমিবা মামাভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত ক্ষুদ্র ভাইরাস স্পুটনিক সমূহ রেপ্লিকেশন করতে পারছে না। সংক্ষেপে বলা চলে, স্পুটনিক ভাইরাসের নিজস্ব প্রতিলিপি তৈরীর জন্য মামাভাইরাস এর কো-ইনফেকশান এর প্রয়োজন রয়েছে।
তবে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো এই যে, ক্ষুদ্র স্পুটনিক ভাইরাস সমূহ এর সংক্রমণ এর ফলে মামাভাইরাস এর বৃদ্ধির হার হ্রাস পায়।
ফলে বুঝা যায়, মামাভাইরাস সমূহ স্পুটনিক ভাইরাসকে প্রতিলিপি তৈরীতে সহযোগীতা করলে ও স্পুটনিক ভাইরাস প্রতিদান হিসেবে মামাভাইরাস এর উৎপাদন সংখ্যা কমিয়ে অপকারই করছে।
গবেষণা করে পাওয়া যায় যে, এখন পর্যন্ত যতগুলো ভিরোফাজ পাওয়া গিয়েছে তাদের সবাই আকারে ক্ষুদ্র এবং এদের জিনোম হলো ডাবল স্ট্র্যান্ডেড ডিএনএ। তাছাড়া, ভিরোফাজ সমূহ আকারে বড় এমন ভাইরাস সমূহের কো-ইনফেকশন ছাড়া প্রতিলিপি তৈরী করতে পারে না।
পরবর্তীতে আরো ভিরোফাজ আবিষ্কার করা হয়েছে তাদের মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো জেমিলন এবং মাভাইরাস।কোন একসময় হয়ত আসবে যখন ভিরোফাজ সমূহকে আমরা ফাজ থেরাপি এর মতো ব্যবহার করতে পারবো।
তানবীর আহাম্মেদ
জীন প্রকৌশলী ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগ
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি
References
Interesting! Impressive writing!