
বাংলাদেশকে ‘উন্নয়নশীল’ থেকে ‘উন্নত’ করার লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত পুরুষের সাথে তাল মিলিয়ে চলেছেন নারীরা। দেশের কৃষিখাত, শিল্পখাত, গবেষণাখাতে বর্তমানে নারীর অবস্থান চোখে পড়ার মতো। শত বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে বিজ্ঞান গবেষণায়ও নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে দূর্বার গতিতে। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে এক নজরে দেখে নেয়া যাক বাংলাদেশের বিজ্ঞান গবেষণায় অনন্য অবদান রাখা কয়েকজন নারী গবেষকদের।
ড. হাসিনা খান
রূপালি ইলিশ ও সোনালী আঁশ পাটের জীবনরহস্য উন্মোচনে সরাসরি যুক্ত ছিলেন সোনালী-রূপালি পর্দার গবেষক হাসিনা খান। ১৯৮৯ সালে ইউনেস্কো/ রোস্টিকা অ্যাওয়ার্ড ফর ইয়াং সায়েন্টিস্ট, ২০১১ সালে এম ও গণি দ্মৃতি স্বর্ণপদক, ২০১৫ সালে কাজী মাহবুবুদ্দীন স্বর্ণপদক, ২০১৬ সালে মণি সিং-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্টি অ্যাওয়ার্ড, ২০১৯ সালে স্বাধীনতা পদক প্রাপ্তি তার জীবনের ধারাবাহিক সাফল্য। তিনি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এর অধ্যাপক হিসেবে নিয়োজিত।

ড. ফেরদৌসী কাদরী
ড. ফেরদৌসী কাদরী মূলত একজন প্রাণরসায়নবিদ, রোগ-প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ এবং ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞ। বিভিন্ন সংক্রামক রোগ যেমনঃ কলেরা, টাইফয়ড, ডায়রিয়া এর জীবাণু নিয়ে গবেষণা এবং টিকা উন্নয়নের জন্য গত ২৫ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। গবেষণার জন্য ২০০৮ সালে গোল্ড মেডেল, ২০১৩ সালে সি. এন. রাও পুরস্কার, ২০২০ সালে ‘লরিয়েল ইউনেস্কো উইমেন সায়েন্স’ সম্মাননা লাভ করেন। ড. ফেরদৌসি কাদেরি বর্তমানে আইসিসিডিআর, বি তে সিভিএস এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ড. জেবা ইসলাম সিরাজ
জীবপ্রযুক্তি ব্যবহার করে লবণ সহিষ্ণু ধান এর জাত উদ্ভাবক হলেন ড. জেবা ইসলাম সিরাজ। মানুষের খাদ্য চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি ফসলের বিভিন্ন জাত উন্নয়ন সম্পর্কিত গবেষণার জন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা করেন প্ল্যান্ট বায়োটেকনলজি ল্যাব। গবেষণাখাতে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৭ সালে অর্জন করেন “অনন্যা সম্মাননা”

সেঁজুতি সাহা
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো করোনা ভাইরাসের জিনোম সিকুয়েন্স বা ডিএনএ এর ক্রমবিন্যাস উন্মোচনের পরপরই জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে এসেছে এক নাম- সেঁজুতি সাহা। তিনি বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যঝুঁকি, সংক্রামক রোগ এবং অণুজীববিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করছেন। দেশে মেনিনজাইটিস ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত শিশুদের মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে টিকাদান কর্মসূচি ও স্বাস্থ্যসেবায় প্রত্যাশিত ভূমিকা রেখেছেন। চিকুনগুনিয়া জ্বরের বিস্তারই মেনিনজাইটিস এর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ- এ বিষয়টি তিনিই নিশ্চিত করেন। গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এই তরুণ গবেষক অর্জন করেন “বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস অ্যাওয়ার্ড-২০১৮”

রুবহানা রাকিব
সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ রুবহানা রাকিব এএলএস পরীক্ষা উন্নয়নের মাধ্যামে যক্ষ্মা রোগ নির্ণয় ও থেরাপিউটিক প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণের সহজ পথ দেখিয়েছেন। তিনি জানান, সেলোনিয়াম সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিন খাওয়ার ফলে আর্সেনিক শরীরে জমা হতে পারে না এবং মলমূত্রের মাধ্যামে শরীর থেকে বের হয়ে যায়।
নারী গবেষকগণ ছাড়াও রয়েছেন নারী শিক্ষক যারা তরুণ প্রজন্ম গড়ে তুলছেন। রয়েছেন নারী শ্রমিক, নারী পাইলট, নারী কর্মকর্তা, গৃহিণী যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সাফল্যের জন্য জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা ও সম্মাননা।

সাদিয়া জামান
হেড অব ডেইলি সায়েন্স প্রজেক্ট, বায়ো ডেইলি
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনলজি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা-১১০০
সূত্রঃ
- https://www.gatesnotes.com/Health/The-Sahas-are-battling-global-health-inequityhttps://www.who.int/influenza_vaccines_plan/advisory_group/qadri/en/
- https://www.google.com/amp/s/amp.en.google-info.org/32123082/1/zeba-islam-seraj.html
- https://wikivisually.com/wiki/Haseena_Khan
- https://www.dhakatribune.com/bangladesh/2021/01/26/3-bangladeshi-scientists-elected-twas-fellows