
মাইটোকন্ড্রিয়া কোষের ব্যাটারি বা পাওয়ার হাউস নামেও পরিচিত। এই ছোট্ট একটি অঙ্গাণু আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে থাকে, আর প্রতিটি কোষ শক্তি উৎপাদনের জন্য মাইটোকন্ড্রিয়ার উপর নির্ভর করে। কখনো ভেবে দেখেছেন কি এই মাইটোকন্ড্রিয়ায় যদি কোন সমস্যা হয় তখন কী হবে?
সম্প্রতি এক গবেষণায় এরই উত্তর খুঁজে বের করেছেন গবেষকরা। সহজভাবে বলতে গেলে বলা যায়, হৃদরোগ, আলসার এবং ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী ভয়ানক রোগ শরীরে বাসা বাঁধে এই মাইটোকন্ড্রিয়ায় সমস্যার কারণে।
মাইটোকন্ড্রিয়া আমাদের প্রতিটি কোষের জন্য শক্তি তৈরি করে, সেই অঙ্গাণুর কোন সমস্যা দেখা দিল আর আমাদের কোন কোষ সেই সেই খবর পেল না তা তো হতে পারে না। আমাদের কোষগুলো মাইটোকন্ড্রিয়ার কোন সমস্যা হলে তা অনুভব করতে পারে এবং এগুলো সঠিক ভাবে কাজ করছে কিনা তাও নিশ্চিত করতে পারে।
মানুষ এবং ইঁদুরের কোষের মাইটোকন্ড্রিয়ার বাইরের ঝিল্লিতে বিশেষ একটি সেন্সর (mitoAMPK) আছে যেগুলো নানা কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মাইটোকন্ড্রিয়াকে সরিয়ে ফেলার বা পরিষ্কার করার সংকেত দেয়, যাকে “মাইটোফ্যাগি” বলে। আর এটি ১০০ বছর আগে আবিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু এটি কিভাবে কাজ করে তা দীর্ঘদিন পর দিন জেন ইয়ান এবং তার সহযোগী গবেষকরা খুঁজে বের করেছেন।
মাইটোকন্ড্রিয়ায় মাইটোকন্ড্রিয়াল সেন্সর mitoAMPK এক এক টিস্যুতে খুবই সামান্য পরিবর্তিত অবস্থায় থাকে। এগুলো আমাদের কোষের শক্তি আদান-প্রদান ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত রাখে।
জেন ইয়ান এবং তার সহযোগী গবেষকরা ইঁদুরের শরীরে মেটফরমিন দিয়ে গবেষণা করার সময় দেখতে পান যে, একটি এন্টি ডায়াবেটিস ড্রাগ কোষের অন্যান্য অংশকে সক্রিয় না করে কঙ্কালের পেশিকে সক্রিয় করে। এটি মূলত হয় আমাদের শরীরের ক্ষতিগ্রস্ত মাইটোকন্ড্রিয়া জমে যাওয়ার কারণে।
মাইটোকন্ড্রিয়া এমন একটি অঙ্গাণু যাকে সুস্থ রাখতে পারলে ডায়াবেটিস, আলসার এবং হৃদরোগের মতো রোগ থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করা যাবে।
নাবিলা রব
জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগ
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি