এক নতুন লেন্টিবায়োটিক পেপটাইড ক্লাস্টারের সন্ধান পেলো বাংলাদেশ
আফিয়া ইমরাদ তাহাসিন

পাট নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে এক নতুন এন্টিমাইক্রোবিয়াল পেপটাইড ক্লাস্টারের খোঁজ পেলেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা যা বেশ কয়েকটি শক্তিশালী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করছে। যে ব্যাকটেরিয়া থেকে এই লেন্টিবায়োটিক আবিষ্কার হয়েছে তার নাম স্টেফাইলো কক্কাস হোমিনিস (Staphylococcus Hominis MBL-AB63) আর পাটের বৈজ্ঞানিক নাম (Corchorus Olitorius) করকোরাস ওলিটোরিয়াস। তাই ব্যাকটেরিয়া আর পাটের সাথে মিলিয়ে এই নতুন লেন্টিবায়োটিকটির নাম দেয়া হয়েছে (Homicorcin) হোমিকরসিন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের দু’জন অধ্যাপক হাসিনা খান ও রিয়াজুল ইসলাম এবং জিন প্রকৌশল ও জীব প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আফতাব উদ্দিনের নেতৃত্বে এক গবেষক দল এই এন্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যের সন্ধান পেয়েছেন। বিজ্ঞান গবেষণার বিখ্যাত জার্নাল ‘নেচার’ এ ২৭ মে তাদের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
বাংলাদেশের সোনালী আঁশ পাট নিয়ে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে গবেষণা হচ্ছিল। পাটের জীবন রহস্য বের করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন অংশে নানা ধরনের অণুজীবের সন্ধান পান। সেই সব অণুজীবের প্রকার আর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য কী হতে পারে তা জানার আগ্রহ থেকেই অণুজীব বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রিয়াজুল ইসলামকে সাথে নিয়ে প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকগণ আবার গবেষণাটি শুরু করেন।
তারা দেখেন, পাটের তন্তুর খাজেঁ খাজেঁ ৫০টির ও বেশি অণুজীব বা ব্যাকটেরিয়া বসবাস করে। সেসব ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে স্টেফাইলো কক্কাস হোমিনিস নামের একটি ব্যাকটেরিয়া খুঁজে পাওয়া যায় যা তার শরীর থেকে এমন কিছু তৈরি করে যাতে আবার অন্য ব্যাকটেরিয়া মারা যায়।
তবে কি আছে সেই ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা এক নতুন এন্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যের সন্ধান পান যা বাঁচিয়ে দিতে পারে এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হওয়া অনেক রোগীকে!
অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স এমন একটি অবস্থা যখন ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিকের আক্রমণ থেকে বেঁচে থাকার ক্ষমতা অর্জন করে। এসব ব্যাকটেরিয়াকে বলা হয় অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়া। এরা অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতিতে অভিযোজিত হয়ে যায় বলে, নিজেদের স্বাভাবিক গতিতে বেড়ে উঠতে ও বংশবিস্তার করতে পারে
আফিয়া ইমরাদ তাহাসিন
ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি চিটাগং
বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড বায়োটেকনোলজি ডিপার্টমেন্ট
তথ্যসূত্রঃ