কিভাবে জননকোষে জেনেটিক উপকরণ মিশ্রিত হয়- শতবর্ষী রহস্যের সমাধান!
নিবির রহমান

সম্প্রতি একদল গবেষকের নতুন আবিষ্কার জীবের জনন কোষের জিনগত পরিবর্তন কিভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় সেটি ব্যাখ্যা করছে। গত ২ আগস্ট, ২০২১, নেচার কমিউনিকেশন জার্নালে গবেষণা পত্রটি প্রকাশিত হয়।
মিয়োসিস নামক একটি বিশেষ কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় জনন কোষ সৃষ্টি হয়। এই প্রক্রিয়ায় জনন কোষ সৃষ্টিকালে ক্রোমোজোমের ডিএনএ খণ্ডগুলোর পরস্পরের মধ্যে বিনিময় ঘটে যাকে ক্রসওভার বলা হয়। এই ক্রসওভার এর ফলেই আইডেন্টিক্যাল টুইন ব্যতীত অন্য সকল ভাই-বোনদের ক্ষেত্রে জেনেটিক গঠন ভিন্ন হয়।
১৯১৫ সালে সর্বপ্রথম ক্রসওভার শব্দটি ব্যবহৃত হয়। এত বছর পরেও এর মূল কোষীয় কার্যপদ্ধতি বিজ্ঞানীদের কাছে ধোঁয়াশা ছিল।
নতুন গবেষণায় গবেষক দল গাণিতিক মডেল এবং সুপার রেজুলেশন মাইক্রোস্কোপ “3D-SIM” ব্যবহার করে শতবর্ষী এই রহস্যের সমাধান করেছেন। তারা একটি মেকানিজমের মডেল তৈরি করেছেন যেটি ক্রসিং ওভারের, সংখ্যা এবং স্থান নির্ণয় করতে পারে।
গবেষকরা HEI10 প্রোটিনের বৈশিষ্ট্য ভালোভাবে লক্ষ্য করেছেন যেটি ক্রসিং ওভার ঘটার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। HEI10 প্রোটিনটি ক্রোমোজোম এর সাথে ক্লাস্টার গঠন করে। প্রাথমিকভাবে ছোট ছোট ক্লাস্টার গঠন করলেও পরবর্তীতে ছোট ছোট ক্লাস্টার গুলো মিলে অল্পসংখ্যক বৃহৎ ক্লাস্টার তৈরি করে। এই ক্লাস্টার গুলো একটি নির্দিষ্ট ক্রিটিকাল ভরে পৌঁছলে সেখানে ক্রসওভার শুরু হয়।
প্রোটিন অনুটির ডিফিউসনের বা বিক্ষেপণ সাধারণ নিয়ম অনুসারে গানিতিক মডেল তৈরি করা হয় এবং মডেলটি ঘটনার ব্যাখ্যা এবং পূর্বানুমান করতে সক্ষম।
গবেষণার কো-ফার্স্ট অথর ড. ক্রিস মরগান গবেষণার গুরুত্ব বোঝাতে বলেন,” বিবর্তন, প্রজননে উর্বরতা এবং সিলেকটিভ ব্রিডিং এ ক্রসওভার পজিশনিং এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। ক্রসওভার এর কার্যপ্রণালী জানার মাধ্যমে আমরা ক্রসওভার পজিশনিং পরিবর্তন করার পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে সক্ষম হব এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীর প্রজননের বর্তমান প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব হবে।”
সূত্রঃ http://dx.doi.org/10.1038/s4167-021-24827
নিবির রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক, বায়ো ডেইলি