
প্রতিটি মানুষ ও প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য ও পানি অপরিহার্য। সব পানি যেমন পানের যোগ্য নয় ঠিক একই ভাবে সব খাবার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়। প্রতিটি মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত, নিরাপদ খাদ্য অপরিহার্য যা জীবনকে বাঁচাতে, রোগমুক্ত করতে সক্ষম। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য যে খাদ্য গ্রহণ করতে হয় তা অবশ্যই পুষ্টিকর, সুষম, ভেজালমুক্ত এবং নিরাপদ হওয়া প্রয়োজন। সুষম ক খাবার ও পানি একজন মানুষকে সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখতে সহায়তা করে। কিন্তু বর্তমানে প্রতিদিনের খাদ্য নানান উপায়ে বিভিন্ন এলকোহল বা অসাধু উপায়ে বিষাক্ত হচ্ছে। পানিও দূষিত হচ্ছে এবং পানের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে। ফলে, আমাদের দৈনন্দিক জীবনে প্রতিমুহুর্তে হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
বাঙালির প্রধান খাদ্য ভাত। বর্তমানে বাংলাদেশ সবরকমের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু, সেই খাদ্য আমাদের জীবনের জন্য কতটুকু নিরাপদ, মানসম্মত ও স্বাস্থ্যসম্মত তা নিয়ে প্রশ্ন সাপেক্ষ। আমরা প্রতিদিন যেসব খাবার গ্রহণ করছি তা অস্বাস্থ্যকর, অনিরাপদ নাকি স্বাস্থ্যকর,নিরাপদ এই বিষয়ে আমরা কেউই নিশ্চিত নয়। তবে বেশির ভাগ খাদ্য ও পানি ভেজাল, নিম্ন মানের।
২০১৮ সালের বাংলাদেশের পানি সরবরাহ, পয়োনিষ্কাশন, স্বাস্থ্য ও দারিদ্র্যের বিশ্লেষণ শীর্ষকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে বিভিন্ন উপায়ে সরবরাহ করা খাবার পানির ৪১ শতাংশ ডায়রিয়ার জীবাণু বহন করছে। পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা ৮০ শতাংশ পানিতে আছে ক্ষতিকর জীবাণু। শহরাঞ্চলে পাইপলাইনে সরবরাহ করা ট্যাপের ৮০ শতাংশ পানিতে ক্ষতিকর জীবাণু ই-কোলাই (E.coli) রয়েছে।
গ্রামাঞ্চলের চেয়ে শহরাঞ্চলের মানুষ এই পানি দূষণের শিকার হচ্ছে বেশি। এই দূষিত ও মানহীন পানি ব্যবহার করে প্রস্তুত করা খাদ্য সামগ্রীও দূষিত হচ্ছে। আর সেই দূষিত খাবার আমরা প্রতিদিন গ্রহণ করছি ফলে নানা ধরনের ডায়রিয়া, জ্বর, আমাশয়সহ দেখা দিচ্ছে নানান ধরনের পানিবাহিত রোগ। এই দূষিত খাবার গ্রহণের ফলে অনেকের শরীরে বাসা বেধেঁছে নানা কঠিন রোগ।
খাদ্য,পুষ্টি ও স্বাস্থ্য পরস্পর সম্পর্ক যুক্ত। সঠিক খাদ্য গ্রহণের ফলে আমরা সুস্বাস্থ্য রক্ষা করতে পারি। প্রতিটি মানুষের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়াও ভেজাল ও ক্ষতিকর রঞ্জক পদার্থযুক্ত খাদ্য থেকে বিরত থাকতে হবে। আমাদের সকলের সুস্বাস্থ্যের জন্য খাদ্য ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ধারণা রাখা অত্যাবশ্যক।
আফিয়া ইমরাদ তাহাসিন
নিজস্ব প্রতিবেদক,
বায়ো ডেইলি।
তথ্যসূত্রঃ
১. https://www.fao.org/3/y5740e/y5740e04.htm
২. https://www.iamat.org/country/bangladesh/food-and-water-safety#