উপরের প্রশ্নটা কি দুবার পড়তে  ইচ্ছে করছে? পড়তেই পারেন আর উত্তরটাও। কারণ, সত্যিই ব্যাকটেরিয়া আমাদের স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। 

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা যায় যে প্রচুর পরিমাণে বিফিডোব্যাকটিরিয়া এবং ল্যাকটোব্যাসিলাস রক্তে  উপস্থিত থেকে স্ট্রেস হরমোন হ্রাস করতে পারে। স্ট্রেসের বহিঃপ্রকাশের ফলে অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া আচরণে এবং সংখ্যায় পরিবর্তন হয়। অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া সম্প্রদায় শারীরিকভাবে বৈচিত্র্যময় হয়ে ওঠে এবং ক্লস্ট্রিডিয়াম-এর মতো ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া গুলোর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এই পরিবর্তনগুলো শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপে গভীর প্রভাব ফেলে।

ওহিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাঃ বেইলি পরীক্ষা করে বলেছেন যে, যখন আমরা কোনো রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে তার অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা হ্রাস করি, তখন সেই রোগীর স্ট্রেসের কিছু প্রভাব কমে যায় – যা থেকে বলা যায় যে “স্ট্রেস কেবল অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা পরিবর্তন করেনা, বরং আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও প্রভাবিত করে। “তিনি এটিকে প্রথম প্রমাণ বলে আখ্যায়িত করেন যে “অন্ত্রের অণুজীবগুলো জন্মগতভাবে স্ট্রেস এর প্রতিক্রিয়ায় ভূমিকা পালন করে।

প্রায় ৫০% নিউরো কেমিক্যাল অন্ত্রের বিভিন্ন কাজ করে যেমন: ক্ষুধা, হজমের হার এবং বিপাক নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি। এই নিউরোকেমিক্যালসগুলি আমাদের দেহের একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ডোপামিন এবং সেরোটোনিন বহন করে।

আমরা অনেকেই ধরে নিয়েছি যে বেশিরভাগ ডোপামিন এবং সেরোটোনিন মস্তিষ্কে উৎপন্ন এবং ব্যবহৃত হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে অন্ত্রের নিউরো কেমিক্যালগুলির বেশিরভাগ অন্ত্রে উৎপন্ন হয় এবং সরাসরি আন্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পরিচালিত হয়।

আমরা সকলেই বুঝি যে, পেটের “ভাল” ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ানো দরকার। ভারসাম্যযুক্ত মাইক্রোবায়োমকে নিশ্চিত করার অন্যতম উপায় হল সেই ব্যাকটেরিয়াগুলির (“প্রিবায়োটিকস”) যখন কার্বোহাইড্রেট প্রয়োজন হয় তখন তাদের তা “খাওয়ানো” হয় – যা এই বিফিডোব্যাকটিরিয়া এবং ল্যাকটোব্যাসিলাসের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী কোন মানুষের অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া কম থাকে কারণ ব্যাকটেরিয়া গুলো সঠিক ভাবে কাজ করে এবং স্ট্রেস কমাতে অপ্রয়োজনীয় নিউরো কেমিক্যাল ত্যাগ করে ।

তথ্যসূত্রঃ

  1. Stress affects the balance of bacteria in the gut and immune response

নাবিলা রব

জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগ

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি

Previous articleকেন খাবেন মধু?  জেনে নিন মধুর উপকারিতা ও গুনাগুন সম্পর্কে
Next articleব্যথাহীন অসহায় জীবন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here